Logo

বাংলাদেশে পোশাক ব্যবসা অব্যাহত রাখবে অ্যাকর্ডভুক্ত দুই শতাধিক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান

Fazlul Haque
মঙ্গলবার, জুলাই ১৯, ২০১৬
  • শেয়ার করুন

ডেস্ক রিপোর্ট : ইউরোপীয় ক্রেতা ও ব্র্যান্ডদের সমন্বয়ে গঠিত কারখানা পরিদর্শন জোট অ্যাকর্ড বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম চলমান রাখবে বলে জানিয়েছে। গতকাল সোমবার তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সঙ্গে আয়োজিত বৈঠকে অ্যাকর্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়, একটি ঘটনা (গুশলান হামলায় বিদেশি নিহত) ঘটে গেছে। কিন্তু আমরা এটি নিয়ে ভীত নই। তবে তাদের নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে আজ (মঙ্গলবার) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে একটি বৈঠকে তাদের বক্তব্য তুলে ধরা হবে। বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

Accord Bangladesh new

বৈঠক শেষে বাংলাদেশে অ্যাকর্ডের প্রধান রব ওয়েজ বলেন, বাংলাদেশে অ্যাকর্ডের ব্র্যান্ডদের ব্যবসা অব্যাহত থাকবে। এ সময় তিনি গুলশান হামলায় নিহতদের প্রতি শোক জানান। বৈঠকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ব্র্যান্ড এইচ এন্ড এমসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে আমেরিকাভিত্তিক ক্রেতাদের জোট অ্যালায়েন্সের পক্ষ থেকেও বাংলাদেশে ব্যবসা অব্যাহত রাখা হবে বলে জানান হয়েছে।

বৈঠকে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানসহ সিনিয়র নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ক্রেতারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, তারা ব্যবসা সরাবে না। কোনো বায়ার বা ব্র্যান্ডের কাছ থেকেও নেতিবাচক কিছু শুনিনি। কোথাও কোনো সমস্যা নেই। সন্ত্রাসী হামলার কোনো নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া আছে কিনা এখনই বলা যাবে না।

অবশ্য বিদেশি ক্রেতাদের প্রতিনিধি হয়ে কাজ করা গার্মেন্টস বায়িং হাউজ অ্যাসোসিয়েশন এরই মধ্যে সংবাদ সম্মেলন করে দেশে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় আড়াইশ’ কোটি ডলারের ব্যবসা বেহাত হওয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছে। তাদের এ পর্যবেক্ষণের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সাংবাদিকদের সিদ্দিকুর রহমান বলেন, তারা তাদের মত ব্যবসা করছে। আমরা বায়ারদের সঙ্গে সরাসরি ব্যবসা করি। এত আগেই প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে কিছু বলা ঠিক হবে না।

রানা প্লাজা ধসে বাংলাদেশের গার্মেন্টস কারখানা ভবনের কাঠামো, অগ্নি ও বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরীক্ষার লক্ষ্যে ২০১৩ সালের মাঝামাঝি অ্যাকর্ড অন ফায়ার এন্ড বিল্ডিং সেফটি ইন বাংলাদেশ নামে এ জোট গঠিত হয়। এতে দুই শতাধিক ব্র্যান্ড যুক্ত রয়েছে। আগামী ২০১৮ সাল পর্যন্ত এসব ব্র্যান্ডের অর্ডার সরবরাহ করে এমন দেড় হাজারের বেশি কারখানার সংস্কার কাজ তদারক করে সনদ দেবে। এর সঙ্গে এইচ এন্ড এমসহ বেশকিছু বড় ব্র্যান্ডও রয়েছে।

সম্প্রতি গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে সন্ত্রাসী হামলায় ১৭ জন বিদেশি নিহত হন। যাদের মধ্যে ৯ জনই গার্মেন্টস ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। এর পর যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশে তাদের নাগরিকদের সফর ও চলাফেরায় সতর্কতার কথা বলে। এমনকি বেশকিছু বিদেশি ক্রেতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে তাদের পূর্বনির্ধারিত সফর বাতিলও করে।

তৈরি পোশাক উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, কানাডার ব্র্যান্ড সিয়ার্সের একটি প্রতিনিধি দলের থাইল্যান্ড, ভারত ও বাংলাদেশ সফরের তারিখ ছিল। কিন্তু সিয়ার্স বাংলাদেশ সফর বাতিল করে সংশ্লিষ্ট রপ্তানিকারককে ভারত বা থাইল্যান্ডে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ব্র্যান্ড অ্যারো পোস্টালও একই কারণ দেখিয়ে সফর বাতিল করে। ওই বৈঠক চীনের সাংহাইয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। একাধিক গার্মেন্টস উদ্যোক্তা ক্রেতাদের সঙ্গে বৈঠকের লক্ষ্যে চীন বা দুবাই সফর করেছেন বলে জানা গেছে। বাংলাদেশের অন্যতম বড় ক্রেতা প্রতিষ্ঠান এইচএন্ডএম আগামী সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে ঢাকায় বিপুলসংখ্যক দেশি-বিদেশির অংশগ্রহণে একটি বড় আকারে প্রদর্শনীর আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছিল। ওই অনুষ্ঠানও স্থগিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ গার্মেন্টস বায়িং হাউজ অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব আমিনুল ইসলাম বলেন, তার ক্রেতা প্রতিষ্ঠান জাপানের বব উইন কোম্পানির ৭ জনের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি আগামী শুক্রবারের পূর্বনির্ধারিত বাংলাদেশ সফর স্থগিত করেছে। বব উইন গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে বাংলাদেশ প্রায় ৮০ কোটি টাকার (এক কোটি মার্কিন ডলার) গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি করে। তিনি বলেন, বব উইনের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে না আসলে এ ব্যবসা হাতছাড়া হতে পারে।