Logo

পোশাক খাতে ২২.৪% নারী শ্রমিক যৌন হয়রানির শিকার: মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন

RMG Times
বুধবার, মে ৮, ২০১৯
  • শেয়ার করুন

ডেস্ক রিপোর্ট: দেশে তৈরি পোশাক খাতের ২২ দশমিক ৪ শতাংশ নারী শ্রমিক যৌন হয়রানির শিকার হন বলে জানিয়েছে ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’। এছাড়া শতকরা ৭৯ দশমিক ৯ ভাগ নারী ও ৭৯ ভাগ পুরুষ শ্রমিকের এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট ধারণা নেই। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক আলোচনা সভায় এ সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।

‘তৈরি পোশাক শিল্প কারখানায় নারী শ্রমিকদের যৌন হয়রানি : সংগ্রাম ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এ সভার আয়োজন করে ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’ ও ‘কর্মজীবী নারী’। ঢাকার মিরপুর ও চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ ও বায়েজিদ বোস্তামী এলাকার ২২টি পোশাক কারখানায় গবেষণাটি চালানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তৈরি পোশাক কারখানার শতকরা ৭৯ ভাগ নারী ও ৮২ দশমিক ৫৬ ভাগ পুরুষ শ্রমিক মনে করেন নারীর দেহে অপ্রত্যাশিত স্পর্শই হলো যৌন নির্যাতন। কর্মক্ষেত্রে নারী শ্রমিকরা যে ধরনের যৌন হয়রানির শিকার হন এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৪২ দশমিক ৩৩ শতাংশ হচ্ছে বাজে দৃষ্টিতে তাকানো, ৩৪ দশমিক ৯২ শতাংশ সংবেদনশীল অঙ্গে কোনো কিছু নিক্ষেপ করা, ২৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ কাজ বুঝানো বা কথা বলার সময় হাত-পা-শরীর স্পর্শ করা। এছাড়াও রয়েছে খারাপ ভাষায় গালি দেওয়া, চাকরি থেকে বরখাস্তের হুমকি, অশোভন অঙ্গভঙ্গি, পদোন্নতির কথা বলে যৌন সম্পর্কের প্রস্তাব ইত্যাদি।

কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়, কর্মক্ষেত্রে নারীর যৌন হয়রানির কারণ হলো অপরাধের কোনো শাস্তি না হওয়া, যৌন হয়রানিকে কারখানা মালিকের পক্ষ থেকে কোনো অপরাধ বলে মনে না করা, মধ্যরাত পর্যন্ত ওভার টাইম করানো। এছাড়া সামাজিকভাবে দুর্বল মনে করার কারণে নারীও এর কোনো প্রতিবাদ করেন না।

আলোচনা সভায় সংসদ সদস্য শিরীন আখতার বলেন, ‘কেন নারী শ্রমিকরা যৌন হয়রানি সম্পর্কে অভিযোগ করেন না? -সেটা হলো চাকরি হারানোর ভয়। হয়রানির শিকার মেয়েটি অপমানজনক কথা এড়িয়ে চলার জন্য অভিযোগ করেন না।’

সভায় বক্তারা বলেন, যৌন হয়রানির ফলে শুধু ভুক্তভোগীরই ক্ষতি হয় না। ভুক্তভোগী নারী রাগান্বিত হন, অপমানিত বোধ করেন। যার ফলে কাজে ভুল হয় এবং সর্বোপরি উৎপাদন কমে যায়।

পোশাক কারখানায় নারীর প্রতি যৌন হয়রানি রোধে অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরে ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’। এগুলো হলো- আইন প্রণয়ন, নারী শ্রমিকদের সচেতনতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি, সরকার, বিজিএমইএ ও বিকেএমই’র মনিটরিং সেল এবং নজরদারি বাড়ানো।

ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ কে এম মিজানুর রহমান, সুইডিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন এজেন্সির সেকেন্ড সেক্রেটারি ইলভা সালস্ট্রান্ড এবং ‘কর্মজীবী নারী’র নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া রফিক প্রমুখ।