ডেস্ক রিপোর্ট: দেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাকের জন্য নতুন করে ১ শতাংশ নগদ প্রণোদনা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। অর্থ বিভাগের হিসাবে শুধু ১ শতাংশ নগদ প্রণোদনা দেওয়ায় ব্যয় বাড়বে ৭৫ কোটি টাকা। ফলে শুধু তৈরি পোশাক খাতের নগদ প্রণোদনা বাবদই সরকারের ব্যয় বেড়ে দাঁড়াবে দুই হাজার ৯০০ কোটি টাকা। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৪ বিলিয়ন বা পাঁচ হাজার ৪০০ কোটি ডলার। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৪ বিলিয়ন ডলার। সে হিসেবে এবার ১০ বিলিয়ন ডলার বেশি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। গত বছর রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০.৫৫ শতাংশ। এর মধ্যে তৈরি পোশাক খাতেই হয়েছে ১১.৪৯ শতাংশ। রপ্তানির এ ধারা অব্যাহত রাখতে তৈরি পোশাক খাতকে আরো উৎসাহী করতে চায়। এ জন্য যারা তৈরি পোশাক রপ্তানিতে কোনো সুবিধা পায় না তাদের আরো ১ শতাংশ নগদ সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ে নগদ প্রণোদনার বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নতুন ১ শতাংশ নগদ সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে ইউরোপ, আমেরিকা এবং কানাডায় তৈরি পোশাক রপ্তানিতে এখন থেকে ১ শতাংশ নগদ সহায়তা দেওয়া হবে। বর্তমানে পোশাক খাতে চার ধরনের নগদ প্রণোদনা দেওয়া হয়ে থাকে। রপ্তানিমুখী দেশীয় বস্ত্র খাতে শুল্ক বন্ড ও ডিউটি ড্র-ব্যাকের পরিবর্তে বিকল্প নগদ সহায়তা বাবদ ৪ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হয়। বস্ত্র খাতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের অতিরিক্ত সুবিধা (প্রচলিত নিয়মের) বাবদ ৪ শতাংশ নগদ প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। নতুন পণ্য/নতুন বাজার (বস্ত্র খাত) সম্প্রসারণ সহায়তা (আমেরিকা/কানাডা/ইইউ ছাড়া) বাবদও ৪ শতাংশ নগদ প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ইউরো জোনে বস্ত্র খাতের রপ্তানিকারকদের জন্য (বিদ্যমান ৪ শতাংশের অতিরিক্ত) ২ শতাংশ দেওয়া হচ্ছে। এর সঙ্গে সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১ শতাংশ যোগ হওয়ায় এ খাতে নগদ প্রণোদনার পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ১৫ শতাংশ। এর ফলে এ খাতে সরকারের ব্যয় আরো এক দফা বাড়ছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের হিসাব মতে, ১ শতাংশ নগদ প্রণোদনা নতুন করে যোগ হওয়ায় সরকারের অতিরিক্ত খরচ হবে প্রায় দুই হাজার ৯০০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দের অতিরিক্ত দুই হাজার ৮২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। সে হিসেবে শুধু ১ শতাংশ প্রণোদনায় খরচ বাড়বে ৭৫ কোটি টাকা। এ খরচ আরো বাড়তে পারে বলে ধারণা করছে অর্থ বিভাগসংশ্লিষ্টরা। রপ্তানি বেশি হলে এটি ২০০ কোটি টাকাও ছাড়িয়ে যেতে পারে। তবে খরচ বাড়লেও সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছেন অর্থসচিব আবদুর রউফ তালুকদার। তিনি জানান, রপ্তানি প্রণোদনায় প্রতিবছরই কিছু না কিছু পরিবর্তন হয়। সে আলোকেই নতুন ১৩টি পণ্য যোগ হয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো বস্ত্র খাতের ১ শতাংশ নগদ প্রণোদনা। এতে ব্যয় বেশি হলেও সমস্যা নেই।
মতামত লিখুন :